আত্মহনন উৎসব লক্ষ্মীর নিশিযাত্রা - কামরুল হুদা পথিক

কামরুল হুদা পথিক

সম্পাদক: দ্রষ্টব্য ও করাতকল

সর্বশেষ

Home Top Ad

আপনি জীবদ্দশায় অপ্রাতিষ্ঠানিক থাকতে পারেন, কিন্তু প্রতিষ্ঠান নামের বুনোশুয়োর আপনাকে থাকতে দেবেনা কারণ, তাদের ‘ঘি’ বলেন আর ‘গু’ বলেন কোন কিছুতে ‘না’ নেই

সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯

আত্মহনন উৎসব লক্ষ্মীর নিশিযাত্রা

গোকুল, রামশহর এবং পলাশবাড়ির সংযোগস্থল এ স্থানটি। একটি শতবর্ষের পুরনো অশ^ত্থ কালচে, ফাটা ফাটা বাকল, কিম্ভুৎকিমাকার কা- এবং ডাল-পালা-পাতার এক ধরনের গুট্লি পাকিয়ে থাকার মত দৃশ্যমান। মাঝ আকাশের চাঁদ গাঢ় ছায়া ফেলেছে গাছটির তলায়। এ একস্তুপ ছায়াম- ছাড়া মেঘ মেঘ আকাশে হেঁটে বেড়ানো চাঁদের আলোয় সবটা পলাশবাড়িই একপ্রকার মায়াবী সেলোফিনে মোড়ানো এবং যেন বা কোন তরল অভ্যন্তরে থিতিয়ে পড়া বস্তুসম । পশ্চিমে হরিপুর থেকে নেমে আসা সড়কটি একটা দীঘির পাড় ঘেঁসে অদৃশ্য এবং পূর্বপাশের্^ গোকুলমুখি লতানো সড়কটি দুটি মাটির ভেতর প্রবেশ, অতঃপর অদৃশ্য। দক্ষিণে পলাশবাড়ি গ্রামের ঘর-বাড়ি, গাছ-গাছালি এবং উত্তরে লখিন্দরের মেড় স্ত রাকৃত কুঠুরি নিয়ে আসমান ছুঁতে ঊর্ধমুখি। ভ্যানটি অশ^ত্থের গাঢ় ছায়ায় প্রবেশের পর সম্মুখে কিংবা পেছনে গতীয়মান হওয়ার অবকাশ থাকল না বরং এ জায়গায়টি এবং ঘটমানতা তিনজন আরোহীর দু’জনকে সমভাবে স্পর্শ করল।বাকি যে জন, যার জন্যে শশীবদনির একটি ঘরকে বায়ুরূদ্ধ অবস্থায় পেছনে ফেলে গোকুলমুখি বন্ধুর সড়ক ধরে ভ্যানটি টায়ার-টিউব-রিং টালমাটাল করতে করতে অগ্রসরমান ছিল তার সাথে কোন কিছুরই সংযোগ স্থাপনের সুযোগ থাকল না। সে শুধু সংযোগ স্খলন করেই খ্যান্ত হয়নি, ঘটমানতায় অন্য দু’জনের মনোজগৎকে হঠাৎ করেই যেন অতীত ও ভবিষ্যৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং অতঃপর উভয়ের চেতনায়ই শুধু বর্তমান টগবগ করতে থাকে। যেন বা কোন এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপেই নিজেদের আবিষ্কার করে যেখানে চলিষ্ণু ভাবনায় আশুপিছু ছুটাছুটি করার প্রচেষ্টা ধীরে ধীরে স্তিমিত হলে বর্তমানেই তাদের আবেশায়ন ঘটে পুরোপুরি। 

ভ্যানে শায়িত লিয়াকত নির্বাক ও নিষ্পলক। শীতের প্রদাহ ছাড়াও লিয়াকতের সারা শরীর লেপমুড়ি দেয়ার অর্থ ছিল মৃতবৎ অসুস্থতা। যাত্রাপথ থেকেই একটা কাঁথায় শরীর মুড়ে আসনের ডান উরুতে দু’হাতের বন্ধনে নির্বাক, নিষ্পলক ও নির্ভার পড়ে থাকা লিয়াকতের মুখের উপর স্থির ও অনড় দৃষ্টিপাত ছিল লক্ষ্মীর। লক্ষ্মীর দু’চোখ জলে ভিজে ভিজে এখন শুকনো। আশপাশের দশ বাড়ির লোকমুখ উপেক্ষা করেই শুধু লিয়াকতের পক্ষকালব্যাপী রোগযন্ত্রণায় বসে যাওয়া ফ্যালফ্যাল ভাষায় যেন তাগিদ অনুভব করে লিয়াকতকে সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার এবং সে সূত্র মতেই লক্ষ্মীর অকুণ্ঠিত নিশিযাত্রা। লিয়াকতকে ঘিরে লোকজনের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বাড়ির সব ক’টি সদস্য, চাঁদমুহা হাঁটের এল, এম, এফ ডাক্তার বলে খ্যাত জীবন ডাক্তার এবং উত্তর পাড়ার মসজিদের বড় হুজুরের সকল চেষ্টা তদ্বিরের তোয়াক্কা না করেই এক সময় লিয়াকত দু’একবার ককিয়ে ওঠে, চোখ দুটো অপেক্ষাকৃত বড় করে চারদিকে কি একটা খোঁজার ও বলার ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং হঠাৎ গা-ঘামা দিয়ে নীরব হয়ে যায়। শুধু অল্পক্ষণ পর পর লিয়াকতের বুকের উঠা-নামা ছাড়া যখন লক্ষ্মীর জীবনে প্রত্যাশার আর কিছুই থাকল না- ঠিক তখন লক্ষ্মী  সবার মাঝ থেকে উঠে দাঁড়ায় এবং অপেক্ষাকৃত অনেক শক্ত থাকার চেষ্টা অব্যাহত রেখে বলেĮ হামি উনাক লিয়া হাসপাতালত যামো। সদু ভাই তোমার ভ্যানডা জলদি লিয়া আসো। আর অমনি পান থেকে চুন খসে গেল ভেবে উপস্থিত লোকজনদের মধ্যে মুখরোচক আলোচনার চর্চা শুরু হয়ে যায়। সকল বাক্যালাপগুলো ম-াকৃতি হয়ে যে বিষয়টা স্পষ্ট হচ্ছিলĮ তার একটা হচ্ছে, মৃত্যু পথযাত্রী লিয়াকতকে এ মুহূর্তে টানাĮহেঁচড়া করা অনুচিৎ এবং অপরটি লিয়াকতের জোয়ান বউ এত রাতে ঘর থেকে বের হওয়া কলংকসমই। কিন্তু কেউই এ যাত্রায় সহযোগিতার জন্য সামান্যতম এগিয়ে আসলো না। লোকগুঞ্জনের ফলস্বরূপ লিয়াকতের বাবা হজরত আলী লক্ষ্মীর যাত্রাপথে মৃদু বাঁধা দিলে তা ব্যর্থতায়ই পর্যবসিত হয়। লক্ষ্মী তখন কিছুটা অগ্নিমূর্তিই ধারণ করে। ফলে সবার উদ্দেশ্যে তার পরবর্তী কথাগুলো অনেকটা বাণের মত ঠেকে।Įলিয়াকত হামার সোয়ামী। অর মরণ হলে হামারো মরণ। এ্যাত্দিন হিনি কেউতো তাক্ হাসপাতালত্ লিয়া যাওয়ার কতা কলো না। এ্যাখন হামাকি লিয়া যাওয়া লাগলো। কি করমো ভাইজানেরা, সোয়ামী ছাড়া হামাকেরে মেয়ে মানুষের বাচা আর মরা একই। অর এ্যাটা কিছু হয়া গ্যালে  হামার কি হĮবিĮনি---গো---। বলতে বলতে লক্ষ্মীর বাক্যবাণ তরলায়িত হয়ে সুরাশ্রিত কান্নায় রূপ পায়। ততক্ষণে লিয়াকতের বন্ধু মদু তার ভ্যান নিয়ে উপস্থিত। খুব দ্রুত লিয়াকতকে ভ্যানে তোলার পর্ব শেষ এবং তৎপর লক্ষ্মী তার শেষ সম্বল দু’আনা ওজনের দু’খানি কানের জিনিস আচঁলে গিঁট দিয়ে অনেকগুলো পুরুষ মহিলার ভিড় কেটে তরতর করে যাত্রা শুরু করে। লিয়াকতের বাবা হজরত আলী কিছুক্ষণ বিড়বিড় করে ভ্যানটির পেছনে পেছনে এগিয়ে পশ্চিম উঠানের মাঝখানে এসে দাঁড়ায়। লক্ষ্মী যেন শেষমেষ হযরত আলীর বুকের উপর দিয়ে ভ্যানের চাকাটা গত্যন্তর থাকল না। তার বাড়ি থেকে নেমে যাওয়া হরিপুর-পলাশবাড়ি-গোকুলমুখি সড়কের উপর হালকা আলোময় রাতে ভ্যানটি এক সময় অদৃশ্য হয়ে ঘরের মাটির বেড়া বেয়ে উপরে উঠে যায়। এত দীর্ঘ ছায়া যেন সে আজ প্রথম দেখল। কিছুক্ষণ আগে এ টিলামত বাড়িটায় ঘটে যাওয়া ঘটনার পুনঃ সূত্রপাত ঘটিয়ে বরফের মত জমে যাওয়া এ বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ হযরত আলী নিজের ছায়ায় দীর্ঘতার সাথে কোন অর্থের সম্পর্ক খুঁজতে চেষ্টা করে। লিয়াকতের ছায়াও কি এতটা দীর্ঘ, না গুটিয়ে গেছে? ছায়ার দীর্ঘতার সাথে হযরত আলীর জীবনের দৈর্ঘ্য মাপার এ দর্শন হঠাৎ করেই সূত্রপাত হয়। নইলে তার ৮০ বছরের জীবনে কত জ¦র কালাজ¦রইত হয়েছে, লিয়াকতের নারকেল গাছের মাথায়, ফাঁক-ফোকে কিছুক্ষণ পর চাঁদের আলো ছিট্কে পড়লে দোচালা মাটির ঘর, আসবাব-তৈজস, ছিমঝাড়, বাঁশঝাড় খোয়ারে আটকানো হাঁস-মুরগী, আশ্রয়হীন একটি কুকুর সহ একটি পুরো উঠান হযরত আলীর দিকে কট্কট্ করে তাকিয়ে থাকে। লিয়াকত কখনও অমন চুপ করে থাকেনি। লক্ষ্মীর মনে হচ্ছে লিয়াকত এখনই কথা বলে উঠবে। দু’বছর আগেই মহাস্থানের চৈত্র সংক্রান্তীর মেলায় লিয়াকত লক্ষ্মীকে নিয়ে টানা-হেঁচড়া করে যে কা-টা বাঁধিয়েছিল তা এখনও স্মৃতিতে বর্তমান। এলাকার সবগুলো মানুষ সারাবছর এ বছরমেলার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। গিজ গিজ করে ঢল নামে মানুষের। হাঁড়ি-পাতিল, চড়কা-বাঁশি-ঝন্ঝনানি, মিঠাই-ম-া-বাতাসা-মিষ্টি, নাড়–-খই, চেয়ার-টেবিল, আচঁড়া-লাঙ্গল এ সবের পাশেই বসে পুতুল নাচের আসর, অন্যদিকে সার্কাস। লিয়াকত লক্ষ্মীকে নিয়ে ম--মিঠাই-মালা কিনে শেষমেষ ঢুকেছে সার্কাসের প্যা-েলে। সার্কাসের প্যা-েলে লক্ষ্মীর প্রবেশ প্রথম বলেই আগ্রহ-অনাগ্রহ কোনটা দ্বারাই সে প্রভাবিত হয়নি। কিন্তু প্রবেশ মাত্রই চারপাশে গোলাকৃতি থাক্ থাক্ মানুষের স্তূপ এবং মাঝখানে কিছু আধপোষাকী মেয়ে, উদ্ভদ রংচং মাখা পোষাকাবৃত একদল লোকের বিদ্ঘুটে আচরণ লক্ষ্মীকে ধাক্কা দেয়। ডান হাতে শাড়ির আঁচলে আধমুখ ঢেকে লিয়াকতকে বলেĮআচ্ছা ওল্যা মেয়ে মানুষগুলোর কি কুনু লইজ্জা শরম নাই? 

লিয়াকত শোনা না শোনার ভান কোনটাই প্রকাশ না করে আরও একটু এগিয়ে পছন্দমত একটি জায়গা দখল করে লক্ষ্মীকে বলেĮদ্যাক, ঐ মুকে দ্যাক। একটা ত্রিশূলের নিম্মমুখী ত্রিশাখার শূচাগ্রতা চক্চক্ করছে। একটি বাঁশের উঁচু মাথায় ঠেকে আছে ত্রিশূলটি। বাঁশটি ডানহাতে ধরে উর্ধনেত্রে দ-ায়মান একটি মেয়ে। চারদিকে পিনপতন স্তব্ধতা। নিষ্পলক সবগুলো মানুষের সামনে যেন এখনই ঘটতে যাচ্ছে এক ভয়ংকর এবং অভূতপূর্ব দৃশ্য। হঠাৎ করেই বাঁশটি ত্রিশূলের কেন্দ্র থেকে সরে পড়ে এবং বাকি অংশ দু’পায়ের সংযোগ পাশে মাটিতে ক্যাঁচ করে বিধে যায়। ঘটনার স্পর্শক্ষণে লক্ষ্মী প্রয়োজনীয় শব্দোচ্চারণের সাথে সাথে চিৎকার এবং লিয়াকতকে জড়িয়ে ধরে। অতঃপর চারপাশ থেকে উত্থিত করতালি ভরে উঠলে লক্ষ্মী চোখ মেলে ত্রিশূলের পাশেই মেয়েটির হাস্যমুখ প্রত্যক্ষ করে। লিয়াকত এবার অন্য একটি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধের ইঙ্গিত করে। একটি মেয়ে খাড়া পাটাতনের উপর পিঠ ঠেকিয়ে দু’হাত লম্বালম্বি ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ১৫/২০ হাত দূর থেকে চোখ বাঁধা একজন লোক এক এক করে অগ্নিসংযোগ করা ছুরি নিক্ষেপ করছে। এক একটি ছুরি দ্রুত মেয়েটার গা ঘেঁসে ঘেঁসে বিধে যাচ্ছে কাঠের পাটাতনে এবং এক সময় অগ্নিপি- থেকে মেয়েটি বেরিয়ে আসলে চারপাশ থেকে করতালি উপচে পড়ে। লিয়াকতের নির্দেশনায় এবার লক্ষ্মী উপরের দিকে তাকায়। অনেক উঁচুতে ঝুলে থাকা লাঠিতে  হাঁটু ঠেকিয়ে মাথা নিচু করে একটি লোক ঝুলে আছে। অন্য পাশে দোলনামত একটি লাঠিতে ঝুলতে থাকা একটি মেয়ে প্রথমে ঝুলে ঝুলে অতঃপর শূন্যে ডিগবাজি খেতে খেতে অপর পাশের লোকটির বাহুবন্ধনের চেষ্টা, ব্যর্থতা এবং লম্বালম্বি ডিগবাজি খেতে খেতে নিচে দ-ায়মান ৪ জনের হাতে টান টান জালে মৎস্য কন্যার মত স্থির। সার্কাস পরবর্তী লক্ষ্মীর বিপদ ঘনীভূত। কোন ভাবেই সে ঘুমোতে পারত না। চোখ বুঁজে এলেই কে যেন তাকে একটি গাছের গোড়ায় পিঠ ঠেঁকিয়ে কষে বেঁধে এক এক করে ছুরি মারতে থাকে আর ছুরিগুলো তার বুকে, তলপেটে, হাতে, পায়ে বিধতে থাকে অথবা কে যেন তাকে অনেক উঁচুতে তুলে ছেড়ে দিত। আর উপর থেকে সে চক্কর খেতে খেতে কোন এক উন্মাতাল নদীর মাঝে পড়ে যেত। আর এসব দেখতে দেখতে এক সময় সারা শরীর ঘেমে এপাশ ওপাশ করতে করতে চিৎকার, অতঃপর সজাগ এবং ঘনলয়ে বক্ষ উত্থান-পতন। এ অবস্থার কোনমতেই অবসান হচ্ছিল না। ঘুমোতে যাওয়ার আগে দোয়া পড়া, লিয়াকতকে জড়িয়ে ঘুমোন এসব কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না বলে লিয়াকত রামশহরের নামকরা জেতন খনকার থেকে একটি তাবিজ এনে রেশমি কাইতনে গলায় ঝুলানোর ব্যবস্থাকরে দেয়। এতে ধীরে ধীরে উদ্ভূত সমস্যা থেকে লক্ষ¥ীর পরিত্রাণ হয়। 

লক্ষ্মীর গলা থেকে তাবিজটা তার ওজন নিয়ে কালো সুতায় লিয়াকতের নির্বাক মুখম-ল ছুঁই ছুঁই এবং ভ্যানের অমসৃন চলাচলে মাঝে মাঝে নেচে উঠলে লক্ষ্মী তাবিজটির ভেতর শক্তি প্রত্যাশা করে। যার ফলশ্রুতিতে অতি সন্তর্পণে ক’বার নিজের সাথেও লুকোচুরি খেলার মত তাবিজটি লিয়াকতের কপাল ছুঁয়ে মন্ত্রপাঠের মত উচ্চারণ করেছে প্রাণ ভিক্ষার। কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। বরং চাঁদনী আলোয় লিয়াকতের মুখম-ল অধিকতর ফ্যাকাশে ও নির্লিপ্ত। এভাবে আরও কিছুটা সময় এগুলো হঠাৎ করেই লক্ষ্মী এক কঠিন দৃশ্যের মুখোমুখি হয়। তীরসম দৃষ্টির উপর অবিশ^াস্য ভাবে লিয়াকত একটু ককিয়ে ওঠে এবং চক্ষু উন্মোচন করলে লক্ষ্মীর চক্ষুদ্বয়ে প্রথম পুলক ও পরবর্তী আচরণে স্তব্ধতা জাকিয়ে বসে। লিয়াকত তৎসময়ে রুগ্ন ও কণ্ঠরূদ্ধতায় কষ্টে বির বির করে উচ্চারণ করেĮল ক্ষ্মী সা র্কা স ত যা বু? লক্ষ্মীর এ নিয়ে ব্যস্ততা বাড়লে বিষয়টি উপলব্ধি করে সদু ভ্যানটি পলাশবাড়ির অশ^ত্থের ছায়াম-ে প্রবেশ ও থামিয়ে লিয়াকতের উপর ঝুঁকে পড়ে। অতঃপর দু’জন মিলে যে দৃশ্যের সাথে পরিচয় তা এ রকমĮলিয়াকতের সংযোগহীন ধীরলয়ে বাক্য ব্যয়ের পর চোখ দুটো অস্বাভাবিক রকম বৃদ্ধি এবং চারদিকে দৃষ্টির পরিভ্রমণের প্রচেষ্টা। ভীষণতর কোন কষ্টের চাপে ও তাপে চক্ষুদ্বয় সিক্ত ও অশ্রুপাত। অতঃপর লিয়াকত মুখম-লকে ভীষণ বিকৃত করে সারা শরীরময় এক প্রকার ঝাঁকুনি দিয়ে দু’এক মিনিটের মধ্যেই সম্পূর্ণরূপে স্থিতি ও শীতলতার প্রসার। এমতাবস্থায় লক্ষ্মী থেকে সকল প্রকার আশা-প্রত্যাশা ঘুরে দাঁড়ালে প্রথমে লিয়াকত ও পরবর্তী সময় সদুকে জড়িয়ে ধরে রাতের নীরবতায় পাড় ভাঙ্গতে থাকে।



Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages