০১.
কতোটা অভিমানে সাজানো বাগান ছেড়ে গেছে বিরান বালুচরে
ধবল পবিত্র বিষাদের রঙ মেখে ফুঁটে থাকে কাশফুলেরা একাকী
কতোটা অভিমানে তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে নির্বিকার কোনো
শিশুর রঙিন স্বপ্নের লুকোনো বাক্সের ভেতর বাহারী বেলুনের গল্প
কতোটা অভিমানে প্রত্যুষের পাখিসব ছেড়ে গেছে চিরচেনা ঘর
সম্মিলিত পাখিগান সূর্যের আলোরা খুঁজে পায়নি তাদের চঞ্চল মন
কতোটা অভিমানে তুমি কফির মগ রেখে ফিরে গেছো অন্ধকারে
আয়নাঘরে নিজেরে নির্ণয় করতে থাকি কোনো এক সিঁথির রেখায়
কতোটা অভিমান হোলে আমি পাহাড়ের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি একা
সমুদ্রকে নদী ভেবে নেমে পড়ি ওপাড়ের যাত্রায় না ফিরবো বলেই।
০২.
অতোটা মায়া রাখিনি তুলে কৌটায় কখনো যতোটুকু মেঘ বালিকা
রেখেছো তোমার মায়ার পাখায় কোন ইশারায় পাখিরা ডেকেছে
প্রত্যুষে ভালোবাসার নীল সঙ্গীতের মূর্চ্ছণায় বুকের ভেতর নড়ে ওঠা
পলাশের লাল রক্তাক্ত দুপুর একাকী উড়ে কার খোঁজে কোনো সন্যাস
বুঝি ঝুলিতে রক্ষিত রেখে তাকিয়ে দেখেছে সুতো কাটা ঘুড়ি বাতাসে
ভেসে ভেসে চলে যায় একাকী মায়ায় সুরের জাদুতে অজানা নগরে।
০৩.
সবকিছু ফেলে চলে যেতে যেতে কোনোদিন পেছনের
সুদৃশ্য ক্যাকটাসেরা টেনে ধরবে আমায় এ আমি যদিও
জানি কিন্তু ততোক্ষণে আমি মাধ্যাকর্ষন বিচ্যুত হয়ে
উড়ে যাচ্ছি, জানি না কতোটা ঊর্ধে অসীমের অবস্থান
পৃথিবীর পিঠে কতোশতো ইলিশের মৃত লালচে চোখের
মায়ারা সুরের জাদুঘরে বিলাপ করতে থাকা দৃশ্য দেখে
মনে নেই ঠিক কখন কিভাবে কোনো এক নতুন ছায়াপথে
উঠে গেছি আর বদলে ফেলেছি চিরচেনা নিজের পোশাক
আমি তার কিছুই মেলাতে পারি না বা মেলাতে চাই না
শুধু বুঝি চারপাশে বাতাসে বাতাসে ভেসে ভেসে আসে
আমার পূর্ব পুরুষের জীবন বৃত্তান্ত প্রেম ও প্রনয় আখ্যান
ছবি ও চিত্রের প্রবাহে আর অসংখ্য ঊর্ধমুখি চোখের মণি।
০৪.
খুব একা হয়ে গেলে ঘরদোর চিরচেনা মুখ সব
কুমোর পাড়ার চুপ মেরে থাকা আগুনের চুলো
অজানা অচেনা হয়ে যেতে থাকে আগুনের শীষ
তখন মাটিকে আপন ভেবে তার দিকে তাকিয়ে
নিজেরে নিমগ্ন রাখি যতোটা বিনয় করেছি সঞ্চয়
এ জীবনে সমর্পিত রাখি পুনর্জন্মের সঞ্চিতি ভেবে
কতো জল মণিতে লুকোনো থাকে ফোঁটা ফোঁটা
বৃষ্টির মতোন মাটির মমতা শুষে নেয় আঁচলে
হে আমার জন্মদাত্রী জননী মৃত্তিকা বুঝি তুমি
তুমি ছাড়া কেউ থাকে না মোর জলের আঁধার
থাকে না যন্ত্রণা কাতর বুকের ভেতর গোঙ্গানো
আছড়ে পড়া সমুদ্রের কান্না শুনবার মতো কেউ
খুব একা হয়ে গেলে আমি দোঁয়াশ মাটির বুকে
নিজেরে নিমগ্ন রাখি যেখানে পরম মমতা নিয়ে
মায়ের ভেজানো কপাট বহুদিন পর খুলে যায়
আমি তাঁর তস্বীহ থেকে ঝড়ে পড়া আলোকণা
কুঁড়িয়ে কুঁড়িয়ে আলোঘরে ঘুমিয়ে যাই যে কখন
কখনো তা মনে করতে চাই না আমৃত্যু ঘুমিয়ে রই।
০৫.
আমাকে ঘুমোতে দিও শব্দহীন কোনো জনপদে
জীবনান্দের সাথে আমি তার বেতফলের ঝোপ ঝাড় পার হয়ে
কোথাও যুগের পর যুগ পার করে একদা জেগে উঠলে
আমি নিজেকে নিজেই চিনতে চাইবো না তখন
কিছু প্যাঁচা আর কিছু বালিহাঁস খুব মায়া ভরা চোখে
ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে থাকবে হয়তো কখনো দেখেছিলো বুঝি মোরে।
০৬.
বহুবারইতো চেয়েছি পালিয়ে যেতে
বুনোফুলের ঝোপে ডুবে থেকে
মধ্যবিত্তের আলখেল্লা ছুঁড়ে ফেলে দেই ভাগাড়ে
পোকামাকড়ের শিল্পচর্চায় মগ্ন থেকে
কিছুকাল নিজেদের আত্মপ্রবঞ্চনা থেকে মুক্ত থাকি
বহুবারইতো ইচ্ছে হয়েছে নদীপাড়ে ভেসে আসা
দূরদেশের অচেনা ঢেউয়ের দিকে মগ্ন থাকি
অতোটা মিথ্যের ভেক দেখে দেখে জমা হয়েছে অবিশ্বাস
নিজের ও চোখের উপর
কথা ও নিঃশ্বাসের উপর
প্রেম ও প্রণয়ের উপর
পালাতে পারি না আমি জং ধরা মরচে খাওয়া
সেই প্রাচীন শহর থেকে
পড়ে থাকি
পঁচে যেতে থাকি
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যেতে থাকি
অতঃপর নিজের মাংস খসে পড়তে থাকে
খুবই প্রাচীন আমার বিবিধ হাড়ের খাঁচা থেকে
তারপর ঠিকঠাক আমি একদা পালিয়ে যাই
সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের উপর
আর আমি খুব সহজেই মিশে যাই
হিংসা-দ্বেষহীন বয়ে চলা মানবিক প্রাকৃতিক বাতাসে।
০৭.
কে তুমি আমায় ঘুম পাড়িয়ে দেবার ছলে নিয়ে চলো
আহার সন্ধানে ছুটে চলা নদী উপনদী পাড় হয়ে এক
অজ্ঞাত শহরে যেখানে অচেনা সব কারা বাস করে
আর আহার বিলিয়ে শেষে সেবাব্রতে সান্ধ্য পুজা সারে
আমার স্বপ্নের সয্যায় কে তুমি মন্ত্রের পদ পড়ে পড়ে
আমাকে ভাসিয়ে রাখো ভূমি আর বায়ু মধ্যবর্তি শূন্যে
আর আমি স্পর্শে মুগ্ধ থাকি শরীরের কাচা হলুদের গন্ধে
হারাই আহার নিদ্রা আমি ও আমার যৌবনের মধুরস
০৮.
গহীন রাতের উপর পরখ করি শুয়ে থাকা তাহার আয়েশি দেহ
ভেসে বেড়ানো শখের নীল খেয়া এপাড় ওপাড় বেড়ায়
যেনো রথ টেনে নেয় ভক্তকূল পূণ্যস্নানে মেঘেরা বৃষ্টির সুরে
গেয়ে যায় প্রাচীন সঙ্গীত তাহারে বৃত্তের কেন্দ্রে রেখে সুখসজ্জায়।
০৯.
তোমার আঁচলে জমিয়েছি মুষ্ঠি মুষ্ঠি চাল
দুঃসময়ের উঠোন
লাউয়ের বীজতলা থেকে সোনামাখা রোদ বেয়ে আহারের সংস্থান
প্রার্থনার ভাষা তুমি শিখিয়েছো
আকাশের দিকে তাকালে থাকে না দুঃখ
অন্ধকার কক্ষে নিয়ে রপ্ত করিয়েছো
নাই বললে থাকে না ক্ষুধাচিত্র
সর্ষে জমির হলুদে ডুব দিয়ে জীবন রাঙানো বিদ্যা
তোমার চোখের জলে জমিয়ে রেখেছি বৃষ্টিজল
খড়া মাঠের সু-সংবাদ
মৃত বীজতলার নিঃশ্বাস সন্তানের হালখাতা
ঘুড়ি উৎসব
প্রজাপতি
ঘরে ফেরার তাগিদে জ্বলে থাকা হ্যারিকেনের সলতে
তোমার দেহের ঘ্রাণ জমা আছে সঞ্চয়ের ঘরে
কফিনের বিষণ্ণ বিলাপ
রক্ষিত রয়েছে শিশিরের ভারে ফসলের মাঠে
সেসব থাকুক তোমার সিঁথিতে
পুরোনো তেলের শিশি
রেখে দিও জমে থাকা বরফের গল্পসব
তোমার আঁচলে জমা রেখো ছিন্নভিন্ন জীবন যৌবন
কফিনের ডালা খুলে দিলে উড়ে যাবে সব প্রজাপতি।
১০.
বরফকুচির মতো শাদা শাদা বালুতটে শুয়ে থাকে জমে থাকে
অর্ধমৃত নগরের ইতিহাস কথিত প্রেমের উপাখ্যান ঝুলে থাকে
কোনো এক মগডালে মৃত্যুকূপ থেকে উঠে আসে ধুপের ধোঁয়ায়
চাপা চাপা হাজারো নিঃশ্বাস বলি হয়ে গিয়েছিলো বুঝি কার
যেনো কোনো মোমের পুতুল দিনে দিনে গড়েছিলো স্বপ্নসুধারস
নগরে কখন এসেছিলো ত্রাসের রাজন আর ল-ভ- করে দিয়েছিলো
যন্ত্রের দানব বিশ্রী চিৎকার নিভে গেছে ঝাড়বাতির আলো আর
অন্ধকারে ডুবে গেলে নগরের রূপ আলোয় ঝলসে ওঠা
সিলিকন জ্যোতি থেকে বিচ্ছুরিত মরিচিকা আমাকে ভুলিয়ে নেয়
লুকোনো স্তব্ধতা পার করে বরফকুচির মতো পড়ে থাকা মৃত্যুর নগরে।
কতোটা অভিমানে সাজানো বাগান ছেড়ে গেছে বিরান বালুচরে
ধবল পবিত্র বিষাদের রঙ মেখে ফুঁটে থাকে কাশফুলেরা একাকী
কতোটা অভিমানে তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে নির্বিকার কোনো
শিশুর রঙিন স্বপ্নের লুকোনো বাক্সের ভেতর বাহারী বেলুনের গল্প
কতোটা অভিমানে প্রত্যুষের পাখিসব ছেড়ে গেছে চিরচেনা ঘর
সম্মিলিত পাখিগান সূর্যের আলোরা খুঁজে পায়নি তাদের চঞ্চল মন
কতোটা অভিমানে তুমি কফির মগ রেখে ফিরে গেছো অন্ধকারে
আয়নাঘরে নিজেরে নির্ণয় করতে থাকি কোনো এক সিঁথির রেখায়
কতোটা অভিমান হোলে আমি পাহাড়ের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি একা
সমুদ্রকে নদী ভেবে নেমে পড়ি ওপাড়ের যাত্রায় না ফিরবো বলেই।
০২.
অতোটা মায়া রাখিনি তুলে কৌটায় কখনো যতোটুকু মেঘ বালিকা
রেখেছো তোমার মায়ার পাখায় কোন ইশারায় পাখিরা ডেকেছে
প্রত্যুষে ভালোবাসার নীল সঙ্গীতের মূর্চ্ছণায় বুকের ভেতর নড়ে ওঠা
পলাশের লাল রক্তাক্ত দুপুর একাকী উড়ে কার খোঁজে কোনো সন্যাস
বুঝি ঝুলিতে রক্ষিত রেখে তাকিয়ে দেখেছে সুতো কাটা ঘুড়ি বাতাসে
ভেসে ভেসে চলে যায় একাকী মায়ায় সুরের জাদুতে অজানা নগরে।
০৩.
সবকিছু ফেলে চলে যেতে যেতে কোনোদিন পেছনের
সুদৃশ্য ক্যাকটাসেরা টেনে ধরবে আমায় এ আমি যদিও
জানি কিন্তু ততোক্ষণে আমি মাধ্যাকর্ষন বিচ্যুত হয়ে
উড়ে যাচ্ছি, জানি না কতোটা ঊর্ধে অসীমের অবস্থান
পৃথিবীর পিঠে কতোশতো ইলিশের মৃত লালচে চোখের
মায়ারা সুরের জাদুঘরে বিলাপ করতে থাকা দৃশ্য দেখে
মনে নেই ঠিক কখন কিভাবে কোনো এক নতুন ছায়াপথে
উঠে গেছি আর বদলে ফেলেছি চিরচেনা নিজের পোশাক
আমি তার কিছুই মেলাতে পারি না বা মেলাতে চাই না
শুধু বুঝি চারপাশে বাতাসে বাতাসে ভেসে ভেসে আসে
আমার পূর্ব পুরুষের জীবন বৃত্তান্ত প্রেম ও প্রনয় আখ্যান
ছবি ও চিত্রের প্রবাহে আর অসংখ্য ঊর্ধমুখি চোখের মণি।
০৪.
খুব একা হয়ে গেলে ঘরদোর চিরচেনা মুখ সব
কুমোর পাড়ার চুপ মেরে থাকা আগুনের চুলো
অজানা অচেনা হয়ে যেতে থাকে আগুনের শীষ
তখন মাটিকে আপন ভেবে তার দিকে তাকিয়ে
নিজেরে নিমগ্ন রাখি যতোটা বিনয় করেছি সঞ্চয়
এ জীবনে সমর্পিত রাখি পুনর্জন্মের সঞ্চিতি ভেবে
কতো জল মণিতে লুকোনো থাকে ফোঁটা ফোঁটা
বৃষ্টির মতোন মাটির মমতা শুষে নেয় আঁচলে
হে আমার জন্মদাত্রী জননী মৃত্তিকা বুঝি তুমি
তুমি ছাড়া কেউ থাকে না মোর জলের আঁধার
থাকে না যন্ত্রণা কাতর বুকের ভেতর গোঙ্গানো
আছড়ে পড়া সমুদ্রের কান্না শুনবার মতো কেউ
খুব একা হয়ে গেলে আমি দোঁয়াশ মাটির বুকে
নিজেরে নিমগ্ন রাখি যেখানে পরম মমতা নিয়ে
মায়ের ভেজানো কপাট বহুদিন পর খুলে যায়
আমি তাঁর তস্বীহ থেকে ঝড়ে পড়া আলোকণা
কুঁড়িয়ে কুঁড়িয়ে আলোঘরে ঘুমিয়ে যাই যে কখন
কখনো তা মনে করতে চাই না আমৃত্যু ঘুমিয়ে রই।
০৫.
আমাকে ঘুমোতে দিও শব্দহীন কোনো জনপদে
জীবনান্দের সাথে আমি তার বেতফলের ঝোপ ঝাড় পার হয়ে
কোথাও যুগের পর যুগ পার করে একদা জেগে উঠলে
আমি নিজেকে নিজেই চিনতে চাইবো না তখন
কিছু প্যাঁচা আর কিছু বালিহাঁস খুব মায়া ভরা চোখে
ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে থাকবে হয়তো কখনো দেখেছিলো বুঝি মোরে।
০৬.
বহুবারইতো চেয়েছি পালিয়ে যেতে
বুনোফুলের ঝোপে ডুবে থেকে
মধ্যবিত্তের আলখেল্লা ছুঁড়ে ফেলে দেই ভাগাড়ে
পোকামাকড়ের শিল্পচর্চায় মগ্ন থেকে
কিছুকাল নিজেদের আত্মপ্রবঞ্চনা থেকে মুক্ত থাকি
বহুবারইতো ইচ্ছে হয়েছে নদীপাড়ে ভেসে আসা
দূরদেশের অচেনা ঢেউয়ের দিকে মগ্ন থাকি
অতোটা মিথ্যের ভেক দেখে দেখে জমা হয়েছে অবিশ্বাস
নিজের ও চোখের উপর
কথা ও নিঃশ্বাসের উপর
প্রেম ও প্রণয়ের উপর
পালাতে পারি না আমি জং ধরা মরচে খাওয়া
সেই প্রাচীন শহর থেকে
পড়ে থাকি
পঁচে যেতে থাকি
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যেতে থাকি
অতঃপর নিজের মাংস খসে পড়তে থাকে
খুবই প্রাচীন আমার বিবিধ হাড়ের খাঁচা থেকে
তারপর ঠিকঠাক আমি একদা পালিয়ে যাই
সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের উপর
আর আমি খুব সহজেই মিশে যাই
হিংসা-দ্বেষহীন বয়ে চলা মানবিক প্রাকৃতিক বাতাসে।
০৭.
কে তুমি আমায় ঘুম পাড়িয়ে দেবার ছলে নিয়ে চলো
আহার সন্ধানে ছুটে চলা নদী উপনদী পাড় হয়ে এক
অজ্ঞাত শহরে যেখানে অচেনা সব কারা বাস করে
আর আহার বিলিয়ে শেষে সেবাব্রতে সান্ধ্য পুজা সারে
আমার স্বপ্নের সয্যায় কে তুমি মন্ত্রের পদ পড়ে পড়ে
আমাকে ভাসিয়ে রাখো ভূমি আর বায়ু মধ্যবর্তি শূন্যে
আর আমি স্পর্শে মুগ্ধ থাকি শরীরের কাচা হলুদের গন্ধে
হারাই আহার নিদ্রা আমি ও আমার যৌবনের মধুরস
০৮.
গহীন রাতের উপর পরখ করি শুয়ে থাকা তাহার আয়েশি দেহ
ভেসে বেড়ানো শখের নীল খেয়া এপাড় ওপাড় বেড়ায়
যেনো রথ টেনে নেয় ভক্তকূল পূণ্যস্নানে মেঘেরা বৃষ্টির সুরে
গেয়ে যায় প্রাচীন সঙ্গীত তাহারে বৃত্তের কেন্দ্রে রেখে সুখসজ্জায়।
০৯.
তোমার আঁচলে জমিয়েছি মুষ্ঠি মুষ্ঠি চাল
দুঃসময়ের উঠোন
লাউয়ের বীজতলা থেকে সোনামাখা রোদ বেয়ে আহারের সংস্থান
প্রার্থনার ভাষা তুমি শিখিয়েছো
আকাশের দিকে তাকালে থাকে না দুঃখ
অন্ধকার কক্ষে নিয়ে রপ্ত করিয়েছো
নাই বললে থাকে না ক্ষুধাচিত্র
সর্ষে জমির হলুদে ডুব দিয়ে জীবন রাঙানো বিদ্যা
তোমার চোখের জলে জমিয়ে রেখেছি বৃষ্টিজল
খড়া মাঠের সু-সংবাদ
মৃত বীজতলার নিঃশ্বাস সন্তানের হালখাতা
ঘুড়ি উৎসব
প্রজাপতি
ঘরে ফেরার তাগিদে জ্বলে থাকা হ্যারিকেনের সলতে
তোমার দেহের ঘ্রাণ জমা আছে সঞ্চয়ের ঘরে
কফিনের বিষণ্ণ বিলাপ
রক্ষিত রয়েছে শিশিরের ভারে ফসলের মাঠে
সেসব থাকুক তোমার সিঁথিতে
পুরোনো তেলের শিশি
রেখে দিও জমে থাকা বরফের গল্পসব
তোমার আঁচলে জমা রেখো ছিন্নভিন্ন জীবন যৌবন
কফিনের ডালা খুলে দিলে উড়ে যাবে সব প্রজাপতি।
১০.
বরফকুচির মতো শাদা শাদা বালুতটে শুয়ে থাকে জমে থাকে
অর্ধমৃত নগরের ইতিহাস কথিত প্রেমের উপাখ্যান ঝুলে থাকে
কোনো এক মগডালে মৃত্যুকূপ থেকে উঠে আসে ধুপের ধোঁয়ায়
চাপা চাপা হাজারো নিঃশ্বাস বলি হয়ে গিয়েছিলো বুঝি কার
যেনো কোনো মোমের পুতুল দিনে দিনে গড়েছিলো স্বপ্নসুধারস
নগরে কখন এসেছিলো ত্রাসের রাজন আর ল-ভ- করে দিয়েছিলো
যন্ত্রের দানব বিশ্রী চিৎকার নিভে গেছে ঝাড়বাতির আলো আর
অন্ধকারে ডুবে গেলে নগরের রূপ আলোয় ঝলসে ওঠা
সিলিকন জ্যোতি থেকে বিচ্ছুরিত মরিচিকা আমাকে ভুলিয়ে নেয়
লুকোনো স্তব্ধতা পার করে বরফকুচির মতো পড়ে থাকা মৃত্যুর নগরে।